স্বপ্ন সুখের বীজ বুনে যাই

[ক]

প্রিয় একজন ভাই একদিন খুব মন খারাপ করে ম্যাসেজ করলেন। ম্যাসেজে যা জানালেন তা হচ্ছে,- তার ছেলেটা স্কুল থেকে একটা খেলনা কাউকে না জানিয়ে নিয়ে এসেছে। শুধু তাই নয়, প্রথমে বলেছে এই খেলনা তাকে তার ম্যাম দিয়েছে। পরে বাবা যখন জোর করে সত্যটা জানতে চাইলেন, তখন বললো যে, ও কাউকে না জানিয়েই এই কাজ করেছে। চুরি করে স্কুল থেকে খেলনা বাসায় নিয়ে এসেছে।

ভাইটা প্র্যাকটিসিং মুসলিম এবং ছেলেকে দ্বীনের বুনিয়াদি বলয়ে বড় করে তুলছিলেন বলেই ছেলের এই কাজ তাকে খুব বেশি আহত করেছে। ম্যাসেজে তিনি আরো বললেন, ‘আমার তো ইচ্ছে করছে ওকে একটা আছাড় দিয়ে মেরে ফেলি। ওর ঘরভর্তি খেলনা। তা-ও সে এই কাজ করেছে’।

তিনি আমার কাছে পরামর্শ চাইলেন এখন তার আসলে কি করা উচিত। আমি বললাম, ছেলেকে বকাঝকা করার কোন দরকার নেই। বাচ্চা মানুষ। সে যা করেছে তা যে ‘চুরি’ হতে পারে, সেই বোধ হয়তো তার মাঝে নেই। এই কাজ যে একপ্রকার ‘চুরি’ এবং এটা যে একটা অপরাধ, গুনাহের কাজ, সেই বোধ তার মধ্যে জাগিয়ে দেওয়ার এখনই সুবর্ণ সময়। তাকে কাছে টেনে, সুন্দর করে গুছিয়ে বলতে হবে যে সে যা করেছে সেটা গুনাহের কাজ। এই কাজের ফলে আল্লাহ তায়ালা তার সাথে রাগ করেছেন। এখন তার উচিত আল্লাহকে বলা, ‘ও আল্লাহ! আপনি আমাকে মাফ করে দিন। আমি ভুল করেছি। আমি আর এরকম করবো না। কখনোই না। আমাকে মাফ করে দিন। প্লিয! প্লিয!’।

[খ]

একবার একটা দেয়ালিকার দুটো লাইনে চোখ আটকে গিয়েছিলো। ওতে লেখা ছিলো-

‘আপনার সন্তানের জন্য সম্পদের পাহাড় রেখে যাবার বদলে তাকেই সম্পদ বানিয়ে যান’।

অসম্ভবরকম শক্তিশালী দুটো লাইন। আমাদের কাছে সন্তানের ভবিষ্যত মানে সন্তানের জন্য ব্যাংক-ব্যালেন্সে কাড়ি কাড়ি টাকা আর বিশাল বিশাল অট্টালিকা গড়ে যাওয়া। এসব করতে পারলেই আমরা ধরে নিই যে আমাদের সন্তানের ভবিষ্যত উজ্জ্বল এবং নিরাপদ। তাকে অর্থকষ্টে পড়তে হবেনা, অন্নকষ্ট ভোগ করতে হবেনা। পায়ের উপর পা তুলে রাজার হালতে দিন গুজরান হবে তার।

কিন্তু, সন্তানের জন্য সম্পদের পাহাড় গড়তে গিয়ে সন্তানের দিকে বিশেষ নজর দেবার সময় এবং সুযোগ আমাদের আর হয়ে উঠেনা। ফলে, সন্তানের জন্য জমাকৃত সম্পদের গ্রাফ যতো উর্ধ্বমুখী হয়, আমাদের সন্তানদের নৈতিক মূল্যবোধ হয় ততোই নিম্নমুখী।

সে আজ স্কুল থেকে এর-ওর খেলনা নিয়ে বাসায় ফিরছে, কিন্তু আমি তাকে কিছুই বলিনি। এমনকি, আমি হয়তো এই খবর জানিও না। আজ এর সাথে মারপিট করছে তো কাল স্কুল থেকে পালাচ্ছে। বন্ধুদের ফাঁদে পড়ে শখ করে আজ বিড়ি ফুঁকছে তো কাল সিগারেট, আর পরশু দিন হয়তো হাতে নিচ্ছে কোন ড্রাগ। কিন্তু, সন্তানের নিরাপদ ভবিষ্যৎ নির্মাণে আমরা এতোই ব্যস্ত আর বিভোর যে, সন্তানটার দিকে তাকাবার ফুসরত পর্যন্ত আমাদের নেই। আমার দিন-রাতের পরিশ্রমের টাকা আর সম্পদ যখন সে মদের বারে খরচ করবে, যখন সে আমার রেখে যাওয়া দালানে নারী নিয়ে ফুর্তিতে মেতে উঠবে, বৃদ্ধাবস্থায় যখন সে আমাকে বৃদ্ধাশ্রমে রেখে এসে তার দায়িত্ব পালন করবে- তখন কি নিজের প্রতি আমাদের একটিবারও আফসোস হবেনা?

আমার শ্বশুরের মুখে শ্বশুরবাড়ির এক লোকের গল্প শুনেছিলাম। ভদ্রলোক খুব কষ্ট করে, একেবারে নিঃস্ব অবস্থা থেকে উঠে এসে এখন এলাকায় ভালো রকমের সহায়-সম্পত্তির মালিক হয়েছে। তার দুটো ছেলে। দুই ছেলেই খুব আদরের সাথে বড় হয়। অন্নদামঙ্গলকাব্যে ইশ্বর পাটনী যেমন বলেছিলেন ‘আমার সন্তান যেন থাকে দুধেভাতে’, একই অবস্থা হয়েছে ছেলে দুটোরও। তারা জন্মের পর থেকেই বাবাকে ‘বড়লোক’ ‘টাকাওয়ালা’ আর ‘বাড়িওয়ালা’ পিতা হিশেবে পেয়ে এসেছে। তাদের জন্মের আগে তাদের পিতার সংগ্রাম আর দূর্দশার চিত্র তারা দেখার সুযোগ পায়নি। ফলতঃ তারা ধরেই নিয়েছে, চাহিবামাত্র তাদের পিতা তাদের সবকিছু দিতে বাধ্য থাকিবেন।

এরপর যা হবার তা-ই হলো। বড় ছেলেটা নেশায় এডিডেক্ট হয়ে পড়ে। তার কোন একটা আবদার বাবা-মা পূরণ না করায় একদিন সে আত্মহত্যা করে বসলো। অন্যটারও হয়েছে একই রোগ। যখন তখন বলে ‘আমাকে এটা দাও-ওটা দাও, নয়তো কিন্তু আমিও ভাইয়ের মতো গলায় ফাঁস দেবো’। বাবা-মা’র হয়েছে জ্বালা! আইফোন চাইলেও দিতে হচ্ছে। নতুন মডেলের বাইক চাইলেও দিতে হচ্ছে। যা চাচ্ছে তাই দিতে হচ্ছে। নয়তো সে তার ভাইয়ের মতোন আত্মহননের পথে হাঁটবে। আদরের অবশিষ্ট পুত্র, যদি মরেই যায় শেষ পর্যন্ত, বাবা-মা তাহলে বাঁচবে কিভাবে দুনিয়ায়? সুতরাং, হয় সন্তানের যন্ত্রণা, নয়তো-বা সন্তানের মরণ-যন্ত্রণা, যেকোন একটা বেছে নিতে হচ্ছে তাদের।

আমরা আমাদের সন্তানদের ভালোবাসি এবং ভালোবাসবো। এই ভালোবাসা সহজাত। কিন্তু, এই ভালোবাসার মানে এটা নয় যে তাকে বেপরোয়া, বেয়াড়া আর উচ্ছৃঙ্খল বানিয়ে ছাড়বো। তার সব কথায়, সব আবদারে সম্মতি জানাবো। সন্তান গড়ার মূল চাবিকাঠি কিন্তু বাবা-মায়ের হাতেই। এটা আকাশ থেকে টুপ করে হাতে এসে পড়া কোন জিনিস নয়, এটা অন্য অনেককিছুর মতো, দীর্ঘ-সংগ্রাম আর ধৈর্যের বিনিময়ে, দুয়ার মাধ্যমে অর্জন করে নিতে হয়। দূর্ভাগ্যবশতঃ জীবনে অনেক স্কিল ডেভেলপমেন্টের দিকে আমাদের দৌঁড়ঝাপ থাকলেওে, সন্তান মানুষ করার মতোন অত্যাবশ্যকীয় গুণ অর্জনের ব্যাপারে আমাদের ততোধিক অনীহা। হতে পারে এটার তাৎক্ষণিক বাজার মূল্য নেই বলে আমরা খুব বেশি পাত্তা এটাকে দিতে চাই না, কিন্তু, এর বিনিময়ে জীবনে যে চরম মূল্য আমাদের গুনতে হয়, তা কখনোই কাগুজে টাকার অঙ্কে পরিমাপযোগ্য নয়।

আবার, আমাদের অনেকে সন্তান মানুষ করা বলতে বুঝে থাকেন সদা-সর্বদা বাবা-মায়ের চোখ রাঙানি, বাচ্চাকে কথায় কথায় ধমক আর ভুল-ত্রুটির জন্য শাস্তি দেওয়া। এগুলো কোনোভাবেই গুড প্যারেন্টিং নয়। সন্তানের সঠিক তারবিয়্যাহ তথা পরিচর্যা হতে হয় ভালোবাসা, সচেতনতা আর সতর্কতার মিশেলে। ছোটবেলায় খাবার টেবিলে খাবার নষ্ট করতে দেখে তাকে চোখ না রাঙিয়ে, ধমক দেওয়ার পরিবর্তে যদি বলি, ‘বাবা, কতো অসহায় মানুষ ওইটুকুন খাবারও খেতে পায় না, তুমি জানো? এভাবে অপচয় করতে নেই, সোনা। যারা অপচয় করে, আমাদের আল্লাহও তাদের পছন্দ করেন না’, আমার এমন ভালোবাসাময় আহ্বান সারাজীবন গেঁথে থাকবে তার অন্তরে। সে-যখনই খাবার নষ্ট করার কথা ভাববে, তখনই তার চোখের সামনে অসহায় মানুষের একটা মুখচ্ছবি ভেসে উঠবে। যখনই বিলাসীতা আর অপব্যয়ের চিন্তা মাথায় আসবে, তার মনে পড়বে আল্লাহর পছন্দ-অপছন্দের কথা। সে নিজেকে সামলাবে, সংযত করবে।

আমাদের ছেলেমেয়েকে আমরা যদি ছোটবেলা থেকে আমানতদারীতা শেখাতে পারি, তাহলে বড় হয়ে সে কখনোই আমাদের সম্পদের যথেচ্ছ ব্যবহার আর অপচয় করবেনা। আমার রেখে যাওয়া সম্পদ থেকে সে হয়তো মসজিদ-মাদ্রাসা নির্মাণ করবে, দান-সাদাকা করবে। আমাদের সম্পদে ভর করে সে কখনোই মদের বার, নাইট ক্লাব কিংবা নিষিদ্ধ পল্লীতে যাতায়াত করবে না। ছোটবেলায় তাকে আমি যা-ই শিখাবো, বড় হয়ে সেগুলোই সে আমাকে ফেরত দিবে।

এমন নয় যে, আমাদের সন্তানের জন্য আমরা কোন সম্পদ রেখে যাবো না। সামর্থ্য থাকলে অবশ্যই তাদের জন্য কিছু করে যাওয়া উচিত। অন্তত, মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকু হলেও। তবে, আমাদের সম্পদ, টাকা-পয়সা যেন কোনোভাবেই আমাদের সন্তানদের প্রভাবিত-প্রলোভিত না করে। আমার সম্পদ যেন তার পতনের কারণ হয়ে না উঠে।

[গ]

সূরা লূকমানে ছেলের প্রতি লূকমান আলাইহিস সালামের উপদেশ তথা নাসীহাহগুলো পড়েছেন কখনো? কতো সুন্দরভাবে, মার্জিত শব্দচয়নে তিনি তাঁর সন্তানকে উপদেশ দিয়েছেন! সূরাটি তেরো থেকে ঊনিশ নম্বর আয়াতেই এই উপদেশগুলো সন্নিবেশিত করা আছে। তিনি বলেছেন-

‘প্রিয় পুত্র! আল্লাহর সাথে কখনোই শরীক করো না। আমার সন্তান! (জেনে রাখো পাপ-পূণ্য) যদি সরিষার দানা পরিমাণও হয় এবং তা যদি পাথর, আসমান কিংবা যমীনের ভিতরেও লুকিয়ে থাকে, তবুও আল্লাহ সেটা (বিচার দিবসের দিন) এনে হাজির করবেন। আমার ছেলে! তুমি সালাত কায়েম করো। সৎকাজে আদেশ এবং অসৎ কাজে নিষেধ করো। বিপদ আপদে পতিত হলে অবশ্যই ধৈর্যধারণ করবে। নিশ্চয় এটা খুব সাহসিকতার কাজ। আর, কখনোই অহংকারবশঃত মানুষকে অবজ্ঞা করো না এবং যমীনের ওপর দম্ভভরে চলাফেরা করো না। নিশ্চয় আল্লাহ কোন দাম্ভিক-অহংকারীকে পছন্দ করেন না। চলাফেরার মধ্যে সংযত ভাব অবলম্বন করবে এবং সর্বদা কন্ঠস্বর নিঁচু রাখবে’।

একজন পিতা কতো উত্তমভাবে, সুন্দর শব্দচয়নে তাঁর সন্তানকে জীবনের দর্শন বাতলে দিচ্ছেন ভাবুন তো। জীবনের সেই দর্শন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া’তায়ালার এতোই পছন্দ হয়ে গেলো যে, তিনি সেগুলোকে কুরআনে স্থান দিয়ে দিলেন। আমরা কি কখনোই এভাবে আমাদের সন্তানদের সাথে কথা বলেছি? তাদের বাতলে দিয়েছি জীবনের এমন দর্শন? চিনিয়ে দিয়েছি জীবনের চলার পথ? হায় আফসোস! ব্যস্ততম কর্পোরেট জীবনে আমাদের সেই ফুসরত কোথায়!

[ঘ]

সন্তানকে সঠিকভাবে মানুষ করেছিলেন ইমাম ইবনে তাইমিয়্যাহ রাহিমাহুল্ললাহ’র মা। সেই নমুনা আমরা দেখতে পাই ইবন তাইমিয়্যাহ রাহিমাহুল্লাহ এবং তাঁর মায়ের মধ্যকার চিঠি চালাচালি থেকে। একবার ইবনে তাইমিয়্যাহ রাহিমাহুল্লাহ দ্বীনের কাজে মিশরে আটকা পড়ে যান। যে সময়ে মায়ের কাছে উপস্থিত হবার কথা ছিলো সেই সময়ে তিনি মায়ের কাছে উপস্থিত হতে পারেন নি। সঠিক সময়ে মায়ের কাছে উপস্থিত হতে না পারার দরুন খুবই ব্যথিত হোন তিনি। এই বেদনাবোধ থেকে তিনি মায়ের কাছে একখানা চিঠি পাঠালেন যাতে লেখা ছিলো-

‘আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। আমার আম্মাজান, আপনার ওপর শান্তি এবং আল্লাহ্‌র রহমত ও নিয়ামত বর্ষিত হোক। সর্বশক্তিমান আল্লাহ আপনাকে রহম করুন। আপনার দু’চোখকে প্রশান্তি দান করুন। তিনি যেন আমাদেরকে তাঁর সর্বোত্তম বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত করেন, কায়মনোবাক্যে এই প্রার্থনা।

আমরা আল্লাহ তা’য়ালার অগণিত নিয়ামতের জন্য তাঁর প্রশংসা করি। তিনি ব্যতীত ইবাদাতের যোগ্য আর কেউ নেই। সবচেয়ে বেশি প্রশংসা লাভের যোগ্য কেবলমাত্র তিনিই। আমরা প্রার্থনা করি তিনি যেন সর্বশেষ নবী ও মুত্তাকীদের ইমাম মুহাম্মাদ সাল্লাললাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর তাঁর অনুগ্রহ বর্ষণ করেন। অবশ্যই আল্লাহ্‌ আমাদের প্রতি বড়ই অনুগ্রহশীল এবং প্রতিনিয়ত আমরা তাঁর অসংখ্য অনুগ্রহ পেয়ে ধন্য হচ্ছি। তাঁর অনুগ্রহের জন্য আমরা তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞ এবং আমরা দুআ করি যেন তিনি আমাদের উপর তাঁর অনুগ্রহকে আরো বাড়িয়ে দেন।

আম্মা, আপনি এই-ব্যাপারে অবগত আছেন যে, গুরুত্বপূর্ণ কিছু দায়িত্ব সম্পন্ন করার জন্য আমাকে মিশরে থাকতে হচ্ছে। এই কাজটি এতোই গুরুত্বপূর্ণ এবং জরুরি যে, যদি তা যথাযথভাবে সম্পাদন করা না হয়, তাহলে দ্বীন ইসলামের বিকৃতি ঘটার মতো অকল্যাণ ঘটে যেতে পারে।

আল্লাহ্‌র শপথ করে বলছি মা! আমি ইচ্ছা করে আপনার কাছ থেকে দূরে থাকছি না। আকাশের পাখিগুলোর যদি আমাকে বহন করার ক্ষমতা থাকতো, তবে আমি তাতে ভর করে আপনার কাছে চলে আসতাম। কিন্তু মা, আমি যে কেন আসতে পারছি না, তা কেবল আমিই জানি। আপনি যদি এখনকার মিশরের অবস্থা দেখতে পেতেন, তাহলে আপনি আমার এখানে অবস্থান করাটাই পছন্দ করতেন অন্য যেকোন স্থানের চেয়ে।

মা, আমি এখানে ভালো আছি। এখানে আসার পর আল্লাহ্‌ তায়ালা এমনভাবে আমার জন্য তাঁর কল্যাণ, নিয়ামত, দয়াকে প্রশস্ত করে দিয়েছেন এবং এমনভাবে দিকনির্দেশনা দান করছেন যা আমি কোনদিন কল্পনাও করিনি। এখনো কিছু অতীব গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করা বাকি আছে। এগুলোকে অবহেলা করলে অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। আমাদের কাজের গুরুত্ব বর্ণনাতীত।

মা, আপনার কাছে একটা অনুরোধ, দয়াকরে আল্লাহ্‌র কাছে দুয়া করার সময় আমাকেও আপনি মনে রাখবেন। সবশেষে, অনুগ্রহ করে বাড়ির ছোটবড় সবার কাছে এবং সব বন্ধুর কাছেও আমার সালাম পৌঁছে দেবেন’।

একজন সন্তান মায়ের প্রতি কতোখানি অনুগত হলে, কতোখানি ভক্তি, শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা মায়ের জন্য একজন সন্তান বুকের ভিতর ধারণ করলে এমন শব্দচয়নে, এমন গভীর ভালোবাসা দিয়ে লিখতে পারে, তার উত্তম উদাহরণ চিঠির প্রতিটি লাইন। একজন ইমাম ইবনে তাইমিয়্যাহকে যিনি ‘ইমাম ইবনে তাইমিয়্যাহ’ হিশেবে গড়ে তুলেছেন, তিনিই যে এমন ব্যবহার, এমন শ্রদ্ধা, সম্মান আর ভক্তি পাবেন, তা অনুমেয়। আপনার পরিচর্যাই আপনার সন্তান প্রতিদান হিশেবে আপনাকে ফেরত দেবে। তার মাঝে প্রতিবিম্বিত হবেন আপনি, যেভাবে চিঠির লাইনে লাইনে ইবনে তাইমিয়্যাহ প্রতিবিম্বত করে গেছেন তারঁ মা’কে।

ইমাম আহমদ ইবন হাম্বল রাহিমাহুল্লাহ’র আম্মাজান প্রতিদিন শেষরাতে উঠে আগে ছেলেকে জাগিয়ে দিতেন তাহাজ্জুদ পড়ার জন্য। তাহাজ্জুদের সময় শেষ হয়ে যখন ফযরের আযান শোনা যেতো, তখন তিনি পুত্র আহমাদ ইবন হাম্বলকে মসজিদের অনেকদূর পর্যন্ত পথ আগিয়ে দিতেন, কারণ তখনও চারপাশে ঘুটঘুটে অন্ধকার থাকতো। এমন নিবিড় পরিচর্যাকারিনীর সন্তান হয়ে উঠলেন যুগশ্রেষ্ঠ ইমাম! সন্তানকে যে তারবিয়্যাহ তারা দিতেন, তা একদিন মহীরুহ হয়ে আকাশ ছুঁতো।

[ঘ]

আমাদের সন্তানেরা হলো আমাদের আয়না। আমরা তাদের মাঝেই প্রতিবিম্বিত হবো। তারা আমাদের স্বপ্নের বীজ, যে বীজ থেকে সুখের মহীরূহ আকাশ পানে মাথা তুলে দাঁড়াবে। তারা হলো আমাদের সবচেয়ে বড় সম্পদ, যে সম্পদের সুফল আমরা আখিরাতেও ভোগ করবো। তারা হয়ে উঠবে আমাদের জন্য সাদকায়ে জারিয়া। যখন আমরা বেঁচে থাকবো না, তখন নিশুঁতি রাতগুলোতে চোখের পানিতে বুক ভাসিয়ে তারা বলবে- ‘রাব্বির হাম হুমা কামা রাব্বা-ইয়ানি সগীরা’। ‘হে আমার প্রতিপালক! আমার পিতা-মাতার প্রতি আপনি ঠিক সেভাবে দয়া করুন যেভাবে তারা আমাকে আমার শৈশবে দয়া, মায়া-মমতা দিয়ে বড় করেছেন’। সত্যিকারের এমন মহীরূহ পেতে হলে সন্তানের হৃদয়-মননে এখন থেকেই বীজ বুনে যেতে হবে। স্বপ্ন সুখের বীজ।

আপনার গুহাটা খুঁজে নিন

সূরা আল কাহাফে বেশ অনেকগুলো ঘটনার পরম্পরা আমরা দেখতে পাই। তবে, মুসা আলাইহিস সালামের মতো প্রসিদ্ধ নবি এবং খিযির আলাইহিস সালামের মতো প্রসিদ্ধ ব্যক্তির ঘটনা এই সূরায় থাকলেও, সূরাটা শুরু হয়েছে কতিপয় যুবকদের দ্বীনে অটল-অবিচল থাকবার ঘটনা দিয়েই।

কোন এক সুপ্রাচীন সময়ে, একটা অঞ্চলের সবাই যখন তাওহিদের রাস্তা থেকে বিচ্যুত হয়ে পড়লো, যখন তারা আল্লাহকে বাদ দিয়ে হরেক রকমের উপাস্যকে ডাকতে শুরু করলো, তখনও কিছু যুবক নিজেদের ঈমান-আমলকে সংরক্ষণ করতে সক্ষম হয়। যখন ভ্রান্তির বেড়াজালে আবদ্ধ হয়ে পড়ে গোটা জনপদ, তখনও তারা স্রোতে মিশে না গিয়ে, নিজেদেরকে ধরে রাখতে পেরেছিলো একত্ববাদের বলয়ে।

কিন্তু, যুবকদলের জন্য ব্যাপারটা মোটেও সহজ ছিলো না। তারা জানতো— তাদের জন্য অপেক্ষা করে আছে এক ঘোর বিপদ। তাদের বিশ্বাসের কথা, সঠিক ধর্মে তাদের নিবিষ্ট থাকবার ঘটনা যদি জানাজানি হয়ে যায়, যদি তা জনপদের হর্তাকর্তাদের কানে পৌঁছে, তাহলেই তাদের জীবন সংশয়ে পড়ে যাবে। তাদের নিশ্চিহ্ন করা হবে চিরতরে।

জীবন এবং ঈমান রক্ষার এমন দূর্বোধ্য দো’টানায় পড়ে যুবকদল একত্র হলো একটা গুহার মধ্যে। সেখানে তারা আল্লাহর কাছে করজোড়ে দুয়া করলো। হৃদয়ের সকল আকুতি, সকল মিনতি সহকারে তারা আল্লাহকে বললো,

‘হে আমাদের পালনকর্তা! আপনার অবারিত রহমত থেকে আমাদের রহমত দান করুন, এবং আমাদের কাজটাকে সঠিকভাবে সম্পূর্ণ করে দিন’- সূরা আল-কাহাফ, আয়াত- ১০

যে ঘোরতর বিপদের মুখে তারা দাঁড়িয়ে, সেখান থেকে তাদের বাঁচাবার ক্ষমতা একমাত্র আল্লাহ ব্যতীত আর কারো নেই। এই দৃঢ় বিশ্বাস তাদের অন্তরে বদ্ধমূল ছিলো বলেই তারা সঠিক সময়ে, সঠিক জায়গায় সাহায্য চেয়ে হাত উঠাতে পেরেছিলো।

চরম দুঃসময়ে, যখন চারদিকে অন্ধকার ছাড়া আর কোনকিছুই দৃশ্যমান নয়, যখন শত্রুর নিঃশ্বাস একেবারে ঘাঁড়ের ওপরে, যখন দ্বীনের ওপর অটল থাকাটা জীবন-মরণের প্রশ্ন হয়ে দাঁড়ায়— এমন অবস্থাতেও এক আল্লাহর ওপর ঈমান ধরে রেখে, দুনিয়ার কারো কাছে ধর্ণা না দিয়ে, কারো মতের সাথে ‘কম্প্রোমাইজ’ না করে কেবলমাত্র আল্লাহর ওপরেই ভরসা রাখতে পারাটা নিঃসন্দেহে খুবই উঁচু স্তরের তাওয়াক্কুলের পরিচয় বহন করে। তাওয়াক্কুলের এমন স্তরে উন্নীত হতে পেরেছিলো বলেই আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া’তায়ালা তাদের দুয়া কবুল করেছিলেন। তাদেরকে দয়া করেছিলেন এবং হেফাযত করেছিলেন তাদের ঈমান।

তিনি তাদের এক সুদীর্ঘকালের জন্য ঘুম পাড়িয়ে দেন। যখন তাদের ঘুম ভাঙলো, তারা অবাক বিস্ময়ে জানতে পারে— যে অত্যাচারী সম্প্রদায়ের হাত থেকে বাঁচতে তারা একদা গুহায় ঢুকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চেয়েছিলো, সেই অত্যাচারী সম্প্রদায় বহু আগেই গত হয়েছে! দুনিয়ায় আর তাদের কোন চিহ্নই অবশিষ্ট নেই! ঈমান থেকে বিচ্যুত না হওয়ায় একদা যেভাবে তাদের প্রাণ নাশের আশংকা দেখা দিয়েছিলো, সেই দুঃসময় এক ঝটিকা স্বপ্নের ভেতরেই অন্তর্হিত হয়েছে।

এই যুবকদলের ঘটনা কেনোই-বা সূরা কাহাফে আসবে, তা-ও আবার একেবারে শুরুতে? কেনো প্রতি জুমা’বারে সূরা কাহাফ তিলাওয়াতের জন্য নবিজী সাল্লাললাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ভীষণভাবে জোর দিয়েছেন?

কারণ, যুবকদল এখনও আমাদের জীবনে ভীষণরকম প্রাসঙ্গিক।

দ্বীন পালন করতে গিয়ে এখনও আমরা অনেক সমস্যার মুখোমুখি হই। চারপাশের এতো এতো বক্রতা, এতো বিদ্বেষ, এতো ভুল আর ভ্রান্তির ভেতর মাঝে মাঝে আমরা সত্যিই হাঁপিয়ে উঠি। মনে হয়— এই বুঝি হাল ছেড়ে দিতে হবে! এই বুঝি আর পারলাম না!

দাঁড়ি রাখতে গিয়ে ছেলেটা ক্যাম্পাসে জঙ্গি ট্যাগ খেলো। তাকে বলা হলো মৌলবাদী! ভয় আর ঘৃণায় সহপাঠীরা তার সাথে মিশতে চায় না।

যে মেয়েটা পর্দা আর হিজাবে আবৃত করে নিলো নিজেকে, ডিপার্টমেন্টের ভাইবা বোর্ডে তাকে করা হলো ভীষণরকম নাজেহাল! পশ্চাদপদ, ক্ষ্যাত সহ নানাবিধ তকমা এঁটে দেওয়া হলো তার গায়ে।

ঘুষের বিনিময়ে যে সৎ অফিসারটা এক দূর্নীতিবাজের কার্যসিদ্ধিতে সহযোগি হলো না, উপরের তলায় লবিং করে তাকে ছাটাই করে দেওয়া হলো রাতারাতি, কিংবা বদলি করে দেওয়া হলো অন্যত্র।

যে মা তার সন্তানকে ইংলিশ মিডিয়ামে দেওয়ার বদলে হিফয-খানায় ভর্তি করিয়েছে, যে মেয়েটাকে হারমোনিয়াম বাজিয়ে সকালে গান শেখানোর বদলে কুরআন শেখাচ্ছেন এক মা— তার জা, তার ননদ কিংবা প্রতিবেশিনীদের কাছে তিনি খুবই আহাম্মক ধরণের মহিলা! সামাজিক কোন অনুষ্ঠানে তিনি একপ্রকার অবাঞ্চিত!

এতো গেলো বাইরের বাঁধার সাতকাহন। নিজের ভেতর থেকেও কি কম বাঁধার মুখোমুখি আমরা হই?

নিজের নফসের বিরুদ্ধে যে অনবরত সংগ্রামে লিপ্ত আমরা, পাপের দুনিয়ায় আমাদের যে বারংবার অনুপ্রবেশ, তা-ও কী বাইরের বাঁধার চাইতে কোনোদিকে কম?

অবশ্যই না। নিজের নফসের কাছে যেভাবে আমরা বারংবার পরাজিত হই, যেভাবে শয়তান রোজ আমাদের দাবার গুটি বানিয়ে খেলে, তাতে বাইরের বাঁধার চাইতে ভিতরের বাঁধা আরো বেশি ভয়ানক, আরো বেশি অনতিক্রম্য আমাদের জন্য। বাইরের বাঁধাকে তা-ও তো ধৈর্য ধরে উপেক্ষা করা যায়, কিন্তু ভিতরের বাঁধাকে আটকাতে যে সংযমের দরকার পড়ে— তা আমাদের অর্জন হলো কই?

দ্বীন পালনে এমন বিভিন্ন বাঁধা, বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ আমাদের সামনে ঘুরেফিরেই আসে। মাঝে মাঝে আমরা এসবে ভীষণ হতাশ হয়ে পড়ি। হাল ছেড়ে দিই কিংবা ধুঁকতে থাকি।

কিন্তু, যদি আমরা আসহাবে কাহাফের সেই যুবকদের মতোন একটা গুহা খুঁজে নিতে পারি, যে গুহায় আমরা কাকুতি-মিনতি করে কেবল আল্লাহর কাছে সাহায্য চাইবো, যে গুহায় চোখের জলে বুক ভাসিয়ে আল্লাহকে বলবো,

‘পরওয়ারদেগার! দ্বীন পালন করতে গিয়ে আজ তাদের কাছে আমি উপেক্ষিত। তারা আমাকে এড়িয়ে চলে। আপনি তো উত্তম বন্ধু আমাদের। এদের চাইতে উত্তম সঙ্গী আপনি আমাকে জুটিয়ে দিন’।

‘হে আমার রব! আপনার সন্তুষ্টির তাগিদেই আমি নিজেকে হিজাবে আবৃত করেছি। ওদের অপবাদের দুঃখ আপনি ছাড়া আর কে আছে আমার যার সমীপে আমি তুলে ধরবো?’

‘মাবুদ! আপনাকে ভালোবেসে ঘুষের মতো হারাম থেকে নিজেকে দূরে রেখেছি। আজ তারা আমাকে দূর্দশায় ফেললো। কিন্তু, উত্তম বিনিময় তো অবশ্যই আপনার কাছে। আপনিই আমার উত্তম বিনিময়দাতা’।

ভাবছেন, দ্বীনে অটল অবিচল থাকার তাগিদে, আল্লাহর কাছে এভাবে চাইতে হলে কোন গুহায় গিয়ে ঠাঁই নেবেন, তাই তো?

আমি খোঁজ দিচ্ছি। আপনার ঘরের কোণে, যে নিভৃত জায়গাটা আছে, মাঝরাতে সেখানটায় জায়নামাজটা পাতুন, এরপর দাঁড়িয়ে যান আল্লাহর সামনে। খুলে বলুন আপনার মনের সকল বাসনা, সকল দুঃখ-কষ্ট যা আপনাকে কুরে কুরে খাচ্ছে। আপনার সকল অপ্রাপ্তি, সকল মন খারাপের গল্প তাঁর সাথেই করে ফেলুন। দেখবেন, আসহাবে কাহাফের ওই যুবকদের মতোন তিনি ঠিক-ই আপনার জন্য একটা রাস্তা বের করে দেবেন যাতে করে আপনি আপনার সমস্যাকে সবরের সাথে উতরে যেতে পারবেন।ভেঙে পড়বেন না। কেবল, আপনার গুহাটা খুঁজে নিন।

ভালবাসা দিবস উপলক্ষে সকল প্রকার অনুষ্ঠান করা হারাম

ভালবাসা দিবস উপলক্ষে সকল প্রকার অনুষ্ঠান করা হারাম

– সৌদি আরবের সর্বোচ্চ ওলামা পরিষদের ফতোয়া

▬▬▬▬◈♡◈▬▬▬▬

সর্বোচ্চ ওলামা পরিষদে বিশ্লেষণের পর এই মর্মে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে যে, কুরআন-সুন্নাহর স্পষ্ট প্রমাণাদি দ্বারা এ কথা অকাট্য ভাবে প্রমাণিত যে, ইসলামে ঈদ বা উৎসবের দিন মাত্র দুটি। সালাফে সালেহীনগণও এ বিষয়ে একমত হয়েছেন। ইসলামে স্বীকৃত ঈদ দুটির একটি হল ঈদুল ফিতর, অপরটি হল ঈদুল আজহা বা কুরবানির ঈদ।

উল্লিখিত ঈদ দুটি ব্যতীত যত ঈদ বা উৎসব আছে, হোক না তা কোন ব্যক্তির সাথে সম্পৃক্ত বা কোন গোষ্ঠীর সাথে সম্পৃক্ত বা কোন ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত তা বিদআত। মুসলমানদের তা পালন করা বা পালন করতে বলা বৈধ নয় এবং এ উপলক্ষে আনন্দ প্রকাশ করা ও এ ব্যাপারে কিছু দিয়ে সাহায্য করাও নিষেধ। কেননা এ ধরণের কাজ আল্লাহ তা’আলার সীমা লঙ্ঘন বৈ অন্য কিছু হবে না। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর সীমা লঙ্ঘন করবে সে নিজের উপর অত্যাচার করবে।

এ ধরণের কালচার বিধর্মীদের অনুসরণের কল্পে গ্রহণ করা হলে অপরাধ আরও মারাত্মক হবে। কারণ এর মাধ্যমে তাদের সদৃশ্যতা গ্রহণ করা এবং তাদেরকে এক ধরণের বন্ধু বানানো হয়। অথচ আল্লাহ তাআলা মুমিনদেরকে এ থেকে বারণ করেছেন।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,

من تشبه بقوم فهو منهم “যে ব্যক্তি কোনও সম্প্রদায়ের সাথে সাদৃশ্যতা অবলম্বন করল সে তাদের দলভুক্ত বলে গণ্য। ভালবাসা দিবস পালন করাও এ নিষেধের অন্তর্ভুক্ত। কেননা এটি খৃষ্টানদের উৎসব। যে মুসলমান আল্লাহ এবং পরকালের প্রতি বিশ্বাস রাখে তার জন্য এ কাজ করা বা এই দিনে কাউকে ফুল বা অন্যকোনো উপহার দেয়া বৈধ নয়। বরং তার কর্তব্য হল আল্লাহ এবং তার রাসূলের হুকুম পালন করা এবং আল্লাহর শাস্তি ও গযব আসে এমন কাজ থেকে নিজে দূরে থাকা ও অন্যদের দূরে রাখা।অতএব এ দিবসকে কেন্দ্র করে পানাহার করা, ক্রয়-বিক্রয় করা, কোন কিছু প্রস্তুত করা বা উপঢৌকন দেয়া, চিঠি-পত্র চালাচালি করা ও প্রচার-পত্র বিলি করা অবৈধ।

এ সমস্ত কাজের মাধ্যমে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের নাফরমানি করা হয়। আল্লাহ তা’আলা বলেন,وَتَعَاوَنُوا عَلَى الْبِرِّ وَالتَّقْوَى وَلَا تَعَاوَنُوا عَلَى الْإِثْمِ وَالْعُدْوَانِ وَاتَّقُوا اللَّهَ إِنَّ اللَّهَ شَدِيدُ الْعِقَاب“সৎকর্ম ও আল্লাহ ভীতিতে একে অন্যের সাহায্য কর। পাপ ও সীমালঙ্ঘনের ব্যাপারে একে অন্যের সহায়তা করো না।” (সূরা মায়িদাহ: ২)

▬▬▬▬◈♡◈▬▬▬▬

সৌদি আরবের গবেষণা ও ফতোয়া প্রদান বিষয়ক স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান ও সদস্যবৃন্দ:

১) চেয়ারম্যান: আব্দুল আযিয বিন আব্দুল্লাহ বিন মুহাম্মাদ আলে শেখ

২)সদস্য: সালেহ বিন ফাওজান আল-ফাওজান

৩) সদস্য: আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহমান আল-গুদাইয়ান

৪) সদস্য: বকর বিন আব্দুল্লাহ আবু জায়েদ

[ফতোয়া নং ২১২০৩ তারিখঃ ২৩-১১- ১৪২০ হি.]